শুভ্র - হুমায়ুন আহমেদ

অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী
প্রথম প্রকাশ : একুশে বইমেলা 2000
সমকালীন উপন্যাস
প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ
পৃষ্ঠা সংখ্যা : 240
মুদ্রিত মূল্য : 375 টাকা
প্রতি রাত তিনটায় শুভ্রর ঘুম ভেঙ্গে যায়। আবার ঘুম আসতে আসতে সকাল ছয়টা। তাই এই তিনঘন্টার জন্য শুভ্র একটা রুটিন বানিয়ে রেখেছে। কিন্তু আজ হঠাৎ করে রাত বারোটায় ঘুম ভেঙ্গে গেল শুভ্রর। ঘুম ভাঙতেই অবিকল বাবার গলায় কে যেন বলে উঠল-
শুভ্র ভাত খাইছ?
শুভ্র ভাত খাইছ?
তীব্র আতংক যেন একটা পরশ বুলিয়ে গেল শুভ্রর উপর। শেষে জানা গেল শুভ্রর বাবা মোতাহার সাহেব কলমাকান্দা থেকে তিনমাস আগে এটা ময়না পাখি আনিয়েছিলেন। সেটাকে অফিসে রেখে এতদিন কথা শিখিয়েছেন। আর আজ তার জন্মদিনে তার মা জাহানারা সেই ময়নার কথা শুনিয়ে শুভ্রর ঘুম ভাঙিয়েছেন।
শুভ্র - সুন্দর একটা ছেলে। মাথা ভর্তি কোঁকড়ানো চুল। পাতলা ঠোঁট লালচে হয়ে থাকে। তার মায়ের প্রায়ই মনে হয় ছেলে না হয়ে মেয়ে হলে অতি রূপবতী এক তরূনীর মা হতেন তিনি। মা জাহানারার খুব ইচ্ছে ছেলেকে বিয়ে দিয়ে ঘরে বৌ আনবেন তিনি। মাথায় একহাত ঘোমটা দিয়ে বালিকা বউ পায়ে নূপুর পায়ে পুরো ঘর ঘুরবে দিনরাত।
এর কিছুদিন পরেই ভয়ংকর একটা ব্যাপার ঘটে যায় শুভ্রর জীবনে। শুভ্রর বাবা মারা যান হঠাৎ করেই। বাবার মৃত্যুর পর শুভ্র জানতে পারে শহরের সবচেয়ে বড় পতিতালয়ের একটা বড় অংশের মালিক এখন সে। তিনটা বাড়িতে বায়ান্নটা মেয়ে আছে। মেয়েদের আয়ের অর্ধেকের মত পায় তারা। এই ভয়ংকর সত্যিটা এতদিন সবাই লুকিয়ে রেখেছিল শুভ্রর কাছ থেকে।
বাবার বন্ধুর মেয়ে বিনু, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী মীরা, পতিতালয়ের বাসিন্দা আসমানী প্রত্যেকে প্রভাবিত করতে থাকে শুভ্রকে। শুভ্র এখন কি করবে? সেতো বেশি কিছু চায়নি। শুধু চেয়েছে শুদ্ধতম মানুষ হতে। তার আশা কি পূরণ হবে? কে তাকে বানাবে শুদ্ধতম মানুষ?
আমার কথা :
এই উপন্যাসটা মোটামুটি বিশাল আকৃতির, 240 পৃষ্ঠার। হুমায়ূন আহমেদের বেশিরভাগ লেখাই 80-100 পাতার হয়ে থাকে। বেশিরভাগ মানুষ তাকে এই জন্য বাজারি লেখক বলে থাকেন। আমি বলি বাজারি লেখক হতেও এলেম লাগে। বাজারে তো কতজনের লেখা পাওয়া যায়। তার কতজনের লেখা এভাবে মুড়ি-মুড়কির মত বিক্রি হয় কেউ বলতে পারবে?
যাই হোক মূল প্রসঙ্গে আসি। শুভ্র যখন পড়া শুরু করি তখন ঠিক জানতাম না এর গভীরতা কতটুকু। পড়তে পড়তে হারিয়ে গিয়েছিলাম আমি এই উপন্যাসের পাতায় পাতায়।।। মা জাহানারা, বাবার বন্ধু হাবীবুর রহমান, তার মেয়ে বিনু, এই চরিত্রগুলা ভাল লেগেছে। অন্যদিকে ম্যানেজার সাহেব, মীরা, আসমানী চরিত্রগুলো শক্তিশালী হলেও ভাল লাগে নাই। বিশেষ করে আসমানীকে খুবই বিরক্তিকর লেগেছে।।।
সবাই স্বাগতম।।। হ্যাপি রিডিং।।।

Comments

Popular posts from this blog

রিক্তের বেদন- কাজী নজরুল ইসলাম

নবনী- হুমায়ুন আহমেদ

মা - আনিসুল হক