হেজাজ থেকে ইরান - নসীম হিজাযী

অনুবাদক: মুজাম্মদ আব্দুল আলীম
প্রকাশনা: আল-এছহাক প্রকাশনী
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৪৯৬
.

"হেজায থেকে ইরান" হচ্ছে পাকিস্তানের বিখ্যাত লেখক নসিম হিজাজী লেখা ইসলামের মুজাহিদদের পারস্য বিজয়ের ইতিহাসের উপর নির্মিত 'কাফেলায়ে হেজাজ' এর উর্দু থেকে বাংলা অনুবাদ।
লেখক সম্বন্ধে বলতে গেলে উনি অনন্য,অসাধারণ। ওনার এধরণের আরো কিছু উপন্যাস রয়েছে,সেগুলোও বেশ, চমতকার ।অনুবাদকও যুতসই অনুবাদ করেছে।
.
বইটি পড়ার আগে বইটির নাম ও বইটির প্রচ্ছদ আমাকে প্রভাবিত করেছে।
বইয়ের উপন্যাসে প্রধান চরিত্রের নাম হাসসান।পারস্য সম্রাজ্যের একজন আরব কিষাণের ছেলে।
সে পারস্যের ফৌজে অংশগ্রহণ করে রোম সম্রাজ্যের সাথে যুদ্ধ করেছে।যুদ্ধে পরাজয়ের পর রোমানদের হাতে বন্দী হয়।
আর এইসব আগমন ঘটে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:)।
বন্দীদশা থেকে ফিরে এসে হাসসান দেখতে পায় ইরানি শাষকদের অত্যাচার নির্যাতনে তার বাবা - ভাইয়ের প্রাণ গেছে এবং বোন ইজ্জ্বত রক্ষায় আত্মহত্যা করে।সে ভেঙে পরে।
এভাবে নানারকম ঘটনার মধ্য দিয়ে বাহরাইনে গিয়ে মুসলমানদের সাথে যোগ দেয় হাসসান এবং ইসলাম ধর্ম গ্রন্থ গ্রহণ করে।
.
মাত্র হাজার খানেক সৈন্য নিয়ে মুসান্না ইবনে হারেসার নেতৃত্ব্র মুসলমানরা সমগ্র পারস্যে ইনসাফ ও ন্যায়ের শাষণ প্রতিষ্ঠার লক্ষে অগ্রসর হয়।
খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা) ও এই সময় যুদ্ধে অংশ নেয়।যদিও তিনি একসময় পুনরায় খলিফার নির্দেশে শাম অভিমুখে রওয়ানা দেয়।
.
এভাবেই একের একের পর লড়াইয়ে বীরত্বের সাথে পারস্য বিজয়ের ইতিহাস উপন্যাস আকারে তুলে ধরে লেখক।
.
তবে বইটি পড়ার সময় যে বিষয়টি আমাকে প্রতিমূহুর্তে মূহুর্তে অবাক করেছে, তা হচ্ছে কিভাবে ইসলামের মুজাহিদরা এতো নগণ্য সংখ্যক সৈন্য নিয়ে ততকালীন পরাশক্তি ইরানের লাখ লাখ সৈন্য,বিশাল অস্ত্রের ভাণ্ডার , বিশালাকার হিংস্র জংলি হাতি ও উটের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে।.
আরো অবাক করা বিষয় হচ্ছে যেখানেই ইসলামের বিজয় পতাকা পতপত করে উড়েছে সেখানকার মানুষেরা প্রথমে লুটতারাজের ভয় পেয়ে অনেকে পালিয়ে যায়।
কিন্তু তারা ক্ষণে ক্ষণে উপলব্ধি করে এই বিজয়ী দল অন্য সবার থেকে ভিন্ন।আর পলায়ন করা লোকেরা শুধু নিজের এলাকাতেই ফিরে আসেনি,তারা ইসলামের সুশীতল ছায়াতেও আশ্রয় নিয়েছিল।

Comments

Popular posts from this blog

রিক্তের বেদন- কাজী নজরুল ইসলাম

নবনী- হুমায়ুন আহমেদ

মা - আনিসুল হক